শীঘ্রই শুরু হচ্ছে মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে পত্র বিনিময় হয়েছে। মহেশখালী-চৌফলন্ডী ফেরীঘাট ও মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু বাস্তবায়ন দাবী ইতোমধ্যে আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। এ দাবী বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচী দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করায় আশান্বিত হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এই দুইটি দাবী বাস্তবায়ন হলে মহেশখালী উপজেলা পর্যটকদের জন্য আকর্ষনীয় স্থানে পরিণত হবে মনে করছেন বিভিন্ন পেশার লোকজন।
মহেশখালী উপজেলার ৫ লাখ মানুষের দুর্ভোগের প্রধান স্থান মহেশখালী-কক্সবাজার পারাপার ঘাট। বর্ষা হলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ পারাপার হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানী ঘটছে মানুষের। তাই ধীরে-ধীরে এই দুইটি দাবী সাধারণ মানুষের মাঝে অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে ১৯৮৭ সালে মহেশখালী জেটি নির্মাণ, পরবর্তিতে স¤প্রসারণ ও এরপরে নেপাল সরকারের অর্থায়নে আদিনাথ জেটি নির্মিত হলেও নদী ভরাটের কারণে জনদুর্ভোগ লেগেই আছে। এতে কতিপয় স্পিডবোট ব্যবসায়ি তাদের আয় বাড়াতে নিময়নীতির লংঘন করার কারণে ক্রমশঃ জটিল হয়ে উঠে পরিস্থিতি। দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের প্রচেষ্টায় ২০১৮-১৯ সালে মহেশখালী জেটি এলাকার খাল দুই দফায় খনন করা হলেও ধীরে-ধীরে আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সেতু নির্মাণের গুরুত্ব অনুধাবন করে আশেক উল্লাহ রফিক এমপি কর্তৃক উত্থাপিত মহেশখালী-কক্সবাজার সেতুর ব্যাপারে মহেশখালী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে তথ্য চাওয়া হলে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৩৫-২০-২২০০-১১০.০১.০১৯.১৬.৯৬২ স্মারকে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন। পত্রে মহেশখালী আদিনাথ থেকে চৌফলদন্ডী সড়ক পর্যন্ত এলাকাটি সেতু নির্মাণে সবচেয়ে উপযোগী স্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তা জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন।
এ বিষয়ে আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, মহেশখালী-চৌফলদন্ডী ফেরীঘাট চালু করার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ফেরীঘাট চালু করার কাজ শুরু হবে। আমরা চাই মানুষ যাতে নিরাপদে পারাপার করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গনমানুষের দাবীর প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল। মানুষের কল্যাণেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু নির্মাণের বিষয়টি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই খুব দ্রুত শুরু হবে। আওয়ামী লীগ সরকার কাজে বিশ্বাসী।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণের বিষয়টির দিয়ে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সবকিছু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মহেশখালী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মকবুল আহমদ জানিয়েছেন, আগে যাত্রী পারাপার নিরাপদ করতে হবে। প্রশাসন চাইলে তা সহজেই পারা যাবে। ফেরীঘাট চালু করার সাথে সাথে সেতু বাস্তবায়ন হোক। যেটি আগে প্রয়োজন সেটিই বাস্তবায়ন করা সকলের দাবী।
বঙ্গবন্ধু সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক জাফর আলম জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রায় ২ শতাধিক পেশাজীবী কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যাতায়ত করেন। অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও পারাপার হতে হয়। নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আগে ফেরি সার্ভিস চালু করা হোক। একই সাথে সেতু নির্মাণের কাজও এগিয়ে যাক। এসব বাস্তবায়ন হলে মহেশখালী হবে পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্থান।
সুত্র:দৈনিক কক্সবাজা।