কক্সবাজারের উখিয়ায় পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের নামে বন্দোবস্ত চুক্তিতে নেওয়া খাস জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে বাণিজ্যিক ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিওবা চুক্তিতে চুক্তির উদ্দেশ্য ব্যতিত অন্য কোন ভাবে ব্যবহার করা যাবে না বলে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও শর্তাবলী যথাযথ ভাবে তা মানা হচ্ছে না।
জানা গেছে, শহীদ এটিএম জাফর আলম স্মৃতি সংসদ এর পরিচালনায় পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের নামে কোটবাজার কাঁচা বাজারাস্থ যাত্রী ছাউনীর পিছনে ০.০৪০০ একর খাস জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত চুক্তিতে লীজ দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক।
বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের সৃজিত খতিয়ান
সুত্রে জানা গেছে, (দীর্ঘর্মেয়াদী বন্দোবস্ত মামলা নং ০২/২০১৫-২০১৬ (উখিয়া), বিগত ১২/০১/২০১৬ ইং তারিখের আদেশমতে রত্নাপালং মৌজার বি.এস ১নং খতিয়ানের বি.এস ২৭৬ দাগের ০.০৪০০ (শূণ্য দশমিক এক দুুই শূণ্য শূণ্য) একর জমি বন্দোবস্ত গ্রহীতা প্রাপ্ত হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) উখিয়া এর ২৪/০২/২০১৬ খ্রি. তারিখের আদেশমতে বন্দোবস্ত গ্রহীতার নামে ৮৭৩৪ নং খতিয়ান সৃজিত হয়।)
সরেজমিন দেখা গেছে, পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের নামে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দোকান ভাড়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শহীদ এটিএম জাফর আলম স্মৃতি সংসদ এর সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন ভাড়াটিয়ার সাথে কথা বলা হলে তারা কেউ মুখ খুলতে রাজী নন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী কথার কথার চলে বলেন, তারা ৬/৮ লাখ টাকা করে ভাড়ায় দোকান নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। তাদের কোন চুক্তিনামা বা প্রাপ্তি স্বীকার পত্র দেয়নি। যা নিয়ে তারা নিজেরাও উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছে।
এ বিষয়ে শহীদ এটিএম জাফর আলম স্মৃতি সংসদ এর সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম সাথে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের নির্মাণাধীন কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। তার আগে আমার কোন আত্বীয় স্বজন কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে আমি কারো কাছ থেকে এক টাকাও নিই নাই। কাজ সম্পন্ন না হওয়ার পূর্বে গত ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর কিভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হলো তা নিয়ে সে কোন সদোত্তর দিতে পারেনি।
গত ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর উদ্বোধনের ফলক
এনিয়ে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আ’লীগ নেতা অধ্যাপক আদিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের নামে জায়গাটি দীর্ঘর্মেয়াদী বন্দোবস্ত নেওয়া হলেও এ ধরণের কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। কিন্তু ওই শিক্ষা কেন্দ্রে বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হতে দেখেছি। তবে, লোকজনের মুখে শুনেছি এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নাকি ৬/৮ লাখ টাকা করে অগ্রীম নিয়ে দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শহীদ এটিএম জাফর আলম স্মৃতি পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। উক্ত পরিচালনা বোর্ডের মাধ্যমে পাঠাগার ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালিত হবে। কিন্ত এখনো পর্যন্ত ভবনটির নিমার্ণ কাজ শেষ না হওয়ায় পরিচালনা বোর্ডকে হস্তান্তর করা হয়নি। যার কারণে এ বিষয়ে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না। যখন পরিচালনা বোর্ডকে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে তখন বোর্ড কর্তৃক সব কিছু পরিচালিত হবে।