কক্সবাজারের উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্প কেন্দ্রিক যত অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে এতে জড়িত রয়েছে খুলু মিয়ার ছেলে মোঃ ইয়াসিন, দিল মুহাম্মদের ছেলে সোনা মিয়া, কালা মিয়ার ছেলে ইউনুছ, নুর আলমের ছেলে জানে আলম ও মোঃ জাকের। মিয়ানমারে তাদের সকলের বাড়ী নাপ্পুরা এলাকায়।
সরজমিন লম্বাশিয়া ক্যাম্প ঘুরে বিভিন্ন রোহিঙ্গা সাথে কথা বলে জানা যায়, আরসা নেতা কেফায়াত উল্লাহ, প্রকাশ আব্দুল হালিম নেতৃত্বে মোঃ ইয়াসিন সহ অপরাপর রোহিঙ্গারা এসব অপকর্ম গুলো করে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোহিঙ্গা জানান, লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যেসব রোহিঙ্গারা রয়েছে তারা সবাই এই ৫ সদস্যের গ্রুপের কাছে জিম্মি। ব্যবসা,বাণিজ্য,চাকরি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে চাঁদা দিতে হয় তাদেরকে। এই ৫ সদস্যের গ্রুপের প্রায় ২ শতাধিক রোহিঙ্গা রয়েছে, যারা বিভিন্ন ব্লক থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে তাদেরকে এনে দেয়।
এছাড়াও এই গ্রুপের মুল কাজ হচ্ছে- ইয়াবা, মাদক, স্বর্ণ ও অস্ত্র পাচার আর ক্যাম্পে ত্রাস সৃষ্টি করা৷ মিয়ানমারের ওপারে তাদের নিজস্ব লোক রয়েছে, যাদের মাধ্যমে রাতের আধারে সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা, স্বর্ণ ও অস্ত্রের চালান নিয়ে এসে মজুদ করে রাখে। পরবর্তী সুযোগ বুঝে দেশে বিভিন্ন স্থানে পাচার করে দেয়।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও গত ৫ বছরে ইয়াবা,মাদক, স্বর্ণ ও অস্ত্র নিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে যত অপরাধী আটক হয়েছেন তাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা।
আরেক রোহিঙ্গা জানান, গত ২০২০ সালে লম্বাশিয়া ক্যাম্পে ৪জন রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা করেছিল ইয়াসিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী। এ সময় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়। কিন্তু কৌশলে রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করলে লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ফিরে আসবে বলে সে জানায়।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসেন বলেন, গত ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে ৮ জুন ২০২২ ইং পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ১২টি দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র, ১টি বিদেশী অস্ত্র, ৯১ ভরি স্বর্ণ এবং ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৭পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় ৯০১ দুষ্কৃতিকারী রোহিঙ্গাকে আটক করে আইনের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।