একপাশে নির্মিত ভবন,অপর পাশে ঘরবাড়ি আর ধান ক্ষেত । মাঝখানে অবহেলা-অনাদরে পড়ে রয়েছে উখিয়ার খেলাধুলার ‘আঁতুড়ঘর’ খ্যাত পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠ। হঠাৎ দেখলে বিশ্বাস হবে না, এটাকি খেলার মাঠ নাকি অন্য কিছু!
বর্ষা মৌসুম আসলে মাঝখানে পানি জমে রূপ নিয়ে থাকে ডোবায়। এখানে-ওখানে বড় বড় গর্ত, কোথাও কোথাও আবর্জনার ভাগাড়। খেলাধুলা করারতো দূরের কথা, ইনজুরি’তে পড়ার ভয়ে, মাঠে কেউ পা রাখতে সাহস করে না। তাই বলে একেবারেই কোনো কাজে আসছে না, এমনটাও নয়। দ্রুত মাঠ সংস্কার করা হলে খেলোয়াড়’রা আবার উজ্জীবিত হয়ে মাঠে ফিরতে পারবেন।
কোটবাজার স্টেশন থেকে আরকান সড়ক ঘেঁষে ঝাউতলা রাস্তা দিয়ে, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আসাযাওয়া হয়। অতচ এই মাঠেই কয়েক শতাধিক খেলোয়াড়দের অনুশীলনের একমাত্র ভরসা। এইখানে খেলেই উঠে এসেছেন অনেক ফুটবলার এবং অনেক ক্রিকেটার তারা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন লিগ খেলে থাকেন।
পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের বেহাল দশা
মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করতেন কয়েকজন ফুটবলার জানান, দুই একবছর আগে ডিসেম্বরের বিজয় মেলার পর থেকেই, মাঠ এবড়োখেবড়ো হয়ে যায়। এসব কারণে আর খেলার জন্য মাঠটি ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি শীতকালীন সময়ে করোনার প্রাদূর্ভাব আরো ভয়ংকর হতে পারে, তাই ফিটনেস ধরে রাখতে হলে খেলাধুলার কোন বিকল্প নাই বল্লে চলে, কাজেই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা যদি আমাদের মাঠটি সংস্কার করে খেলার উপযোগী করে দেন, অবশ্যই আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো।
জেলার জনপ্রিয়, ফুটবলার ও বর্তমান উখিয়া উপজেলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাইফ (মুন্না) বলেন, একসময় আমরাও পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করতাম। এখান থেকে অনেক ফুটবলার ও ক্রিকেটার উঠে এসেছেন। এখন মাঠ দেখলে কষ্ট হয়, খেলা নেই। ছেলেরা অনুশীলন করতে পারতেছেন না, যদি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা একটু আন্তরিকতা প্রকাশ করেন, আমি মনে করি, অবশ্যই মাঠটি দ্রুত সংষ্কার হয়ে, আবার খেলার উপযোগী হতে পারেন।
ঢাকায় মাট কাঁপানো, বর্তমান সময়ের জনপ্রিয়,তরুণ ফুটবলার ও পালং স্পোর্টিং ক্লাবের বর্তমান ম্যানেজার ও প্রশিক্ষক আজফার আকিব বলেন, মাঠে বড় বড় গর্ত থাকার কারণে আমার ক্লাবের শতাধিক ছেলে’রা অনুশীলন করতে হিমশিম খাচ্ছেন, কিন্তু কোন গেইমস খেলতে পারতে ছিনা আমরা। যদি আমাদের মাঠটি দ্রুত সংষ্কার করা হয়, তা হলে আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ।
ক্রীড়া প্রেমিক, একসময়ের মাঠ কাঁপানো ফুটবলর, নিউ শতদল ক্রিড়া পরিষদের বর্তমান সভাপতি, জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, আমরা একসময় পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠেই খেলাধুলা নিয়ে পড়ে থাকতাম। আমাদের সময় জাতীয় দলের অনেক ফুটবলার খেলোয়াড়রা এখানে এসে খেলে গিয়েছেন। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য, বর্তমানে সেই আগের মাঠটি এখন আর নাই। মাঠ না থাকলে বর্তমান তরুণ সমাজ কে মাদক থেকে রক্ষা করা বড় কঠিন হবে সুতরাং মাদক থেকে ছেলেদের বাঁচা তে হলে,খেলা ধুলার কোন বিকল্প নাই। আমি মনে করি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার উচিৎ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার মাধ্যমে হলেও মাঠটি সংস্কার করে, খেলার উপযোগী করা অতীব জরুরি। না হয় ছেলেদের অদূর ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে পারে।
এইদিকে উখিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন শাহীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি নিয়ে যথেষ্ট অবগত আছি। ইতিমধ্যে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলেছি এবং উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথেও কথা বলেছি। যেন, বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে হলেও মাঠটি দ্রুত সংস্কার করা হয় এবং আমি আগামী সপ্তাহে যে কোন একদিন মাঠটি পরিদর্শন করতে যাবো।