কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সরকারি কলেজ গেইট এলাকায় এ বর্বর হামলার ঘটনা ঘটে।
তার দু’পায়ের হাটুর নিচে কিরিচের কোপ, লোহার রড়ের আঘাত ও ডান হাতের কব্জিতে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মইন উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
হামলার সময় শাখাওয়াতের সাথে থাকা ছাত্রলীগকর্মী আজিজ জানান, প্রতিদিনের মতো তারা সন্ধার পর কলেজ এলাকায় আসে। আড্ডা শেষে সবাই চলে গেলেও শাখাওয়াতসহ তিনজন নানা বিষয়ে কথা বলে। আলাপ শেষে রাত সোয়া ১০ টার দিকে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে একটি সিএনজিতে উঠে শাখাওয়াত। কলেজ গেইট পেরিয়ে পুর্ব দিকে পল্লী বিদ্যুত অফিস পর্যন্ত যাবার পরপরই ৭-৮ জনের একটি দুর্বৃত্তদল সিএনজি টেক্সীর গতিরোধ করে শাখাওয়াতকে নামিয়ে ফেলে। তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করে ছাড়া পেয়েই পশ্চিম দিকে দৌড়ে পালায় শাখাওয়াত। তার পিছনে ধাওয়া করে একই ধরণের পোষাকে থাকা দুর্বৃত্তদল। এসময় তাদের হাতে লম্বা কিরিচ, লোহার রড় ও ছুরি ছিল। সাখাওয়াত দৌড়ে কলেজের পশ্চিমপাশের চান্দেরপাড়া সড়কের একটি দালান ঘরের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। দুর্বৃত্তরা সেখানে গিয়ে তাকে রড় দিয়ে প্রহারের পর কিরিচ দিয়ে কোপাই। হাতের কব্জি কাটতে ছুরি চালায়। তার চিৎকারে স্থানীয়রা জড়ো হলে দু’রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বীরদর্পে পূর্বদিকে চলে যায় হামলাকারীরা।
স্থানীয় এক দোকানি জানান, সবে দোকান বন্ধ করে ভেতরে তালা লাগানোর সময় দেখি একদল যুবক কিরিচ, বন্দুক ও ছুরি হাতে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াতকে ধাওয়া করছে। আমরা জড়ো হয়ে পেছনে যাবার আগেই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়ে গেছে। লোকজন জড়ো না হয় মতো ফাঁকাগুলি করে ভীতি সঞ্চার করে তারা। এরপর লিংকরোড়ের দিকে চলে যায় হামলাকারিরা। রক্তাক্ত সাখাওয়াতকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। খবর পেয়ে জেলা ছাত্রলীগ নেতারা সেখানে আসে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহীন আবদুর রহমান জানান, শাখাওয়াতের দু’পায়ের হাটুর নিচে রড় ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ডান হাতের কব্জির নিচে কেটেছে। জয়েন্ট ভেঙ্গে গেছে বাম হাতের কব্জির। মারাত্মক আঘাত পেয়েছে বুকের ডানপাশে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত শাখাওয়াতের বরাত দিয়ে জেলা ছাত্রলীগ নেতা মইন উদ্দিন জানান, সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বছর খানেক আগে কলেজ ছাত্র শিবিরের দায়িত্বশীল তারেক আজিজের সাথে বাকবিতণ্ডার ঘটনা হয় সাখাওয়াতের। এ নিয়ে দু’পক্ষ বেশ কয়েকবার মুখোমুখি হয়। সাখাওয়াত সদ্য সাবেক হওয়ার সুযোগে তাকে প্রাণনাশের লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীদের মাঝে তারেক আজিজকে চিনতে পেরেছে বলে দাবি করেছে সাখাওয়াত। বাকিরা পেশাদার ক্যাডার হবে পারে বলে ধারণা তার। এ ঘটনায় মামলা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাসুম খান জানান, খবরটি জেনেছি- তবে এখনো লিখিত কোন অভিযোগ হাতে আসেনি। এরপরও হামলাকারীদের সনাক্ত ও ঘটনার মূল কারণ উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।